Topic- প্রকৃতি ও প্রযুক্তিতে বহুপদী রাশি (শ্রেণী - ৯, অভিজ্ঞতা - ৪) - Active Math Class (Bangla)

NCTB Math Solution

Topic- প্রকৃতি ও প্রযুক্তিতে বহুপদী রাশি (শ্রেণী - ৯, অভিজ্ঞতা - ৪)




বহুপদী রাশি (Polynomial Expression):
বহুপদী রাশি হলো এমন একটি গাণিতিক অভিব্যক্তি যা এক বা একাধিক চলক এবং ধ্রুবকের সমন্বয়ে গঠিত হয় এবং যেখানে চলকগুলোর মাত্রা (power) ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা। উদাহরণস্বরূপ, x, x2, x3 ইত্যাদি। বহুপদী রাশি সাধারণত নিম্নলিখিত রূপে লেখা হয়:

P(x) = anxn + an-1xn-1 + ..... + a1x + a0

এখানে,
an, an-1,....., a1, a0 হলো ধ্রুবক (constants)।
x হলো চলক (variable)।
n হলো বহুপদীর সর্বোচ্চ মাত্রা (degree)।

উদাহরণ:

ধরি, একটি বহুপদী রাশি হলো P(x) = 2x3 + 3x2 - 5x + 7

এখন এই বহুপদী রাশিটি ভেঙ্গে পাওয়া যায়:
2x3: এখানে 2 হলো ধ্রুবক, আর x3 হলো চলকের ঘাত।
3x2: এখানে 3 হলো ধ্রুবক, আর x2 হলো চলকের ঘাত।
-5x: এখানে -5 হলো ধ্রুবক, আর x হলো চলকের ঘাত।
7: এটি শুধুমাত্র ধ্রুবক (constant term)।

এই বহুপদী রাশির সর্বোচ্চ ঘাত 3, তাই এই বহুপদীর ঘাত বা মাত্রা হলো 3।

অংশগুলোর নাম:
2x3: তৃতীয় ঘাতের পদ
3x2: দ্বিতীয় ঘাতের পদ
-5x: প্রথম ঘাতের পদ
7: ধ্রুবক পদ (constant term)

বহুপদী রাশির ব্যবহার:
বহুপদী রাশি গাণিতিক বিশ্লেষণ, পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি এবং আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের অভিব্যক্তি সমীকরণ সমাধানে, ফাংশনের গ্রাফ অঙ্কনে এবং বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


বহুপদী রাশি উদাহরণ:

ধরি একটি বহুপদী রাশি P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4

1. ধ্রুবক (Constant)
ধ্রুবক হলো সেই সংখ্যা যা বহুপদী রাশিতে চলকের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং পরিবর্তিত হয় না।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4
এই বহুপদী রাশিতে ধ্রুবক হলো 4।


2. পদ (Term)
পদ হলো বহুপদী রাশির প্রতিটি পৃথক অংশ যা চলক এবং সহগ দ্বারা গঠিত।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4 
এই বহুপদী রাশিতে পদের সংখ্যা হলো পাঁচটি:
3x4
-2x3
5x2
-7x
4


3. মাত্রা বা ঘাত (Degree)
একটি পদের মাত্রা বা ঘাত হলো চলকের উপরের ঘাত বা সূচক।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4
এখানে প্রতিটি পদের ঘাত হলো:
3x4 পদের মাত্রা 4
-2x3 পদের মাত্রা 3
5x2 পদের মাত্রা 2
-7x পদের মাত্রা 1
4 পদের মাত্রা 0 (চলকের কোনো ঘাত নেই, এটি শুধু ধ্রুবক)


4. ধ্রুবপদ বা ধ্রুবক (Constant Term)
ধ্রুবপদ বা ধ্রুবক হলো বহুপদী রাশির সেই পদ যেখানে কোনো চলক নেই, অর্থাৎ এটি শুধুমাত্র একটি ধ্রুবক।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4  
এখানে ধ্রুবপদ হলো 4


5. বহুপদী রাশির মাত্রা (Degree of Polynomial)
বহুপদী রাশির সর্বোচ্চ মাত্রা হলো সেই পদের মাত্রা যার ঘাত সবচেয়ে বেশি।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4 ; এই বহুপদী রাশির সর্বোচ্চ মাত্রা হলো 4, কারণ 3x4 পদের ঘাত সবচেয়ে বেশি।


6. সহগ (Coefficient)
সহগ হলো পদের সংখ্যাগত মান, যা চলকের সাথে গুণিত থাকে।

P(x) = 3x4 - 2x3 + 5x2 - 7x + 4
এখানে প্রতিটি পদের সহগ হলো:
3x4 পদের সহগ হলো 3
-2x3 পদের সহগ হলো -2
5x2 পদের সহগ হলো 5
-7x পদের সহগ হলো -7
4 পদের সহগ হলো 4

আরও একটি উদাহরণ:

ধরি, আরেকটি বহুপদী রাশি Q(x) = x3 + 4x2 - x + 6
এখানে,
ধ্রুবক হলো 6
পদ: x3, 4x2, -x, 6
মাত্রা বা ঘাত:
x3 পদের মাত্রা 3
4x2 পদের মাত্রা 2
-x পদের মাত্রা 1
6 পদের মাত্রা 0
ধ্রুবপদ: 6
বহুপদী রাশির মাত্রা: 3 (সর্বোচ্চ ঘাতের পদ x3)
সহগ:
x3 পদের সহগ হলো 1
4x2 পদের সহগ হলো 4
-x পদের সহগ হলো -1
6 পদের সহগ হলো 6



একচলক বিশিষ্ট একপদী রাশি (Monomial Expressions with One Variable)
একচলক বিশিষ্ট একপদী রাশি হলো এমন একটি গাণিতিক অভিব্যক্তি যা কেবলমাত্র একটি পদ নিয়ে গঠিত এবং একটি চলক রয়েছে।

উদাহরণ: 5x3

এখানে:
পদ: 5x3
চলক: x
ঘাত: 3 (চলকের ঘাত)
সহগ: 5

অন্য একটি উদাহরণ হতে পারে: -2x

এখানে:
পদ: -2x
চলক: x
ঘাত: 1 (চলকের ঘাত)
সহগ: -2



একচলক বিশিষ্ট দ্বিপদী রাশি (Binomial Expressions with One Variable)
একচলক বিশিষ্ট দ্বিপদী রাশি হলো এমন একটি গাণিতিক অভিব্যক্তি যা দুটি পদ নিয়ে গঠিত এবং একটি চলক রয়েছে।

উদাহরণ: 3x2 + 4x

এখানে:
প্রথম পদ: 3x2
দ্বিতীয় পদ: 4x
চলক: x
প্রথম পদের ঘাত: 2 (চলকের ঘাত)
দ্বিতীয় পদের ঘাত: 1 (চলকের ঘাত)
প্রথম পদের সহগ: 3
দ্বিতীয় পদের সহগ: 4



দুই চলক বিশিষ্ট বহুপদী রাশি (Polynomial Expression with Two Variables)
দুই চলক বিশিষ্ট বহুপদী রাশির উদাহরণ হলো এমন একটি বহুপদী রাশি যা দুটি চলক নিয়ে গঠিত।

উদাহরণ:
P(x,y) = 3x2 + 2xy + y2
এখানে:
3x2 হলো x - এর দ্বিতীয় ঘাতের পদ।
2xy হলো x এবং y - এর গুণফল।
y2 হলো y - এর দ্বিতীয় ঘাতের পদ।



তিন চলক বিশিষ্ট বহুপদী রাশি (Polynomials of Three Variables)
তিন চলক বিশিষ্ট বহুপদী রাশির উদাহরণ হলো এমন একটি বহুপদী রাশি যা তিনটি চলক নিয়ে গঠিত।

উদাহরণ:
Q(x,y,z) = x2 + y2 + z2 + 2xy + 2yz + 2zx

এখানে:
x2, y2, z2 হলো x, y, এবং z - এর দ্বিতীয় ঘাতের পদ।
2xy, 2yz, 2zx হলো চলকগুলোর গুণফল।



মুখ্যপদ (Leading Term)
বহুপদী রাশিতে মুখ্যপদ হলো সেই পদ যার চলকের ঘাত সবচেয়ে বেশি।

উদাহরণ: 4x5 + 3x3 - 2x + 7

এখানে:
মুখ্যপদ: 4x5 (কারণ এর ঘাত সবচেয়ে বেশি, অর্থাৎ 5)



মুখ্যসহগ (Leading Coefficient)
মুখ্যসহগ হলো মুখ্যপদের সহগ।

উদাহরণ: 4x5 + 3x3 - 2x + 7

এখানে:
মুখ্যপদ: 4x5
মুখ্যসহগ: 4



সমমাত্রিক বহুপদী (Homogeneous Polynomial)
সমমাত্রিক বহুপদী হলো এমন বহুপদী রাশি যার প্রতিটি পদ একই ঘাতের হয়।

উদাহরণ: P(x,y) = 3x2y + 4xy2

এখানে প্রতিটি পদের মোট ঘাত 3:
3x2y পদের মোট ঘাত 2 + 1 = 3
4xy2 পদের মোট ঘাত 1 + 2 = 3

তাহলে, P(x,y) একটি সমমাত্রিক বহুপদী, কারণ এর প্রতিটি পদের মোট ঘাত একই, অর্থাৎ 3।

আরেকটি উদাহরণ: Q(a,b,c) = 2a3 + 3b3 + 4c3

এখানে প্রতিটি পদের মোট ঘাত 3:
2a3 পদের মোট ঘাত 3
3b3 পদের মোট ঘাত 3
4c3 পদের মোট ঘাত 3

তাহলে, Q(a,b,c) একটি সমমাত্রিক বহুপদী।



প্রতিসম বহুপদী (Symmetric Polynomial)
প্রতিসম বহুপদী হলো এমন বহুপদী রাশি যা এর চলকগুলোর ক্রম (order) পরিবর্তন করলে অভিন্ন থাকে।

উদাহরণ: P(x,y) = x2 + y2 + xy

এখানে P(x,y) এবং P(y,x) একই, অর্থাৎ:
P(x,y) = x2 + y2 + xy
P(y,x) = y2 + x2 + yx

দুটোই অভিন্ন বহুপদী রাশি, তাই P(x,y) একটি প্রতিসম বহুপদী।

আরেকটি উদাহরণ: Q(a,b,c) = a2 + b2 + c2 + ab + bc + ca

এখানে, Q(a,b,c), Q(b,c,a), Q(c,a,b) একই, তাই Q(a,b,c) এটি একটি প্রতিসম বহুপদী।



চক্রক্রমিক বহুপদী (Cyclic Polynomial)
চক্রক্রমিক বহুপদী হলো এমন বহুপদী রাশি যা চলকগুলোকে ঘড়ির কাঁটার দিকে বা বিপরীত দিকে ঘোরালে অভিন্ন থাকে।

উদাহরণ: P(x,y,z) = x2y + y2z + z2x

এখানে P(x,y,z),P(y,z,x) এবং P(z,x,y) একই, অর্থাৎ:
P(x,y,z) = x2y + y2z + z2x
P(y,z,x) = y2z + z2x + x2y
P(z,x,y) = z2x + x2y + y2z

তাহলে, P(x,y,z) একটি চক্রক্রমিক বহুপদী।



বহুপদী রাশির যোগ (Addition of Polynomials)
বহুপদী রাশির যোগ করতে হলে একই ঘাতের পদগুলো একত্র করতে হয়।

উদাহরণ: (3x2 + 2x + 1) + (4x2 - 3x + 5)

সমাধান:
= 3x2 + 4x2 + 2x - 3x + 1 + 5
= 7x2 - x + 6



বহুপদী রাশির বিয়োগ (Subtraction of Polynomials)
বহুপদী রাশির বিয়োগ করতে হলে একই ঘাতের পদগুলো থেকে একে অপরকে বিয়োগ করতে হয়।

উদাহরণ: (5x2 + 3x - 2) - (2x2 - 4x + 1)

সমাধান:
= 5x2 - 2x2 + 3x - (- 4x) - 2 - 1
= 3x2 + 7x - 3



বহুপদী রাশির গুণ (Multiplication of Polynomials)
বহুপদী রাশির গুণ করতে হলে প্রতিটি পদকে একে অপরের সাথে গুণ করতে হয় এবং ঘাতগুলো যোগ করতে হয়।

উদাহরণ: (2x + 3)⋅(x + 4)

সমাধান:
= 2x⋅x + 2x⋅4 + 3⋅x + 3⋅4
= 2x2 + 8x + 3x + 12
= 2x2 + 11x + 12



বহুপদী রাশির ভাগ (Division of Polynomials)
বহুপদী রাশির ভাগ করতে হলে ভাগফল এবং ভাগশেষ নির্ণয় করতে হয়।

সহজভাবে ধাপে ধাপে একটি বহুপদীকে অন্য একটি বহুপদী দ্বারা ভাগ করার একটি প্রক্রিয়া দেখানো হবে। এখানে আমরা 2x3 + 3x2 - x + 5 কে (x - 1) দ্বারা ভাগ করা হবে। এজন্য বহুপদী ভাগ (polynomial long division) ব্যবহার করা হবে।

ধাপ ১: প্রথম পদ নির্ণয়

প্রথমে, উচ্চতম ঘাতের পদ নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।

1. প্রথম পদটি 2x3 এবং ভাগফল হবে  2x3  x = 2x2
2. এরপর 2x2 কে x - 1 দিয়ে গুণ করি এবং 2x3 + 3x2 - x + 5 থেকে বিয়োগ করি।

2x2 × (x - 1) = 2x3 - 2x2

(2x3 + 3x2 - x + 5) - (2x3 - 2x2) = 3x2 - (- 2x2) - x + 5 = 5x2 - x + 5


ধাপ ২: দ্বিতীয় পদ নির্ণয়

এখন 5x2 পদটি ভাগ করি x দিয়ে।

1. দ্বিতীয় পদটি 5x2 এবং ভাগফল হবে  5x2  x = 5x
2. এরপর 5x কে (x - 1) দিয়ে গুণ করি এবং 5x2 - x + 5 থেকে বিয়োগ করি।

5x × (x - 1) = 5x2 - 5x

(5x2 - x + 5) - (5x2 - 5x) = - x - (-5x) + 5 = 4x + 5


ধাপ ৩: তৃতীয় পদ নির্ণয়

এখন 4x পদটি ভাগ করি x দিয়ে।

1. তৃতীয় পদটি 4x এবং ভাগফল হবে 4x x = 4
2. এরপর 4 কে (x - 1) দিয়ে গুণ করি এবং 4x + 5 থেকে বিয়োগ করি।

4 × (x - 1) = 4x - 4

(4x + 5) - (4x - 4) = 5 - (- 4) = 5 + 4 = 9

চূড়ান্ত ফলাফল

তাহলে, ভাগফল হলো 2x2 + 5x + 4 এবং ভাগশেষ হলো 9

সুতরাং:  2x3 + 3x2 - x + 5           x - 1 = 2x2 + 5x + 4 +   9x - 1



ভাগশেষ উপপাদ্য (Remainder Theorem)
যদি p(x) একটি বহুপদী রাশি হয় এবং a একটি ধ্রুবক হয়, তাহলে p(x) কে x - a দ্বারা ভাগ করলে, ভাগশেষ হবে p(a)

ব্যাখ্যা: ভাগশেষ উপপাদ্য আমাদের বলে যে, যদি p(x) - কে (x - a) দ্বারা ভাগ করি, তাহলে ভাগশেষ পাওয়া যাবে p(a) - এর মান। অর্থাৎ, x - এর স্থানে a বসিয়ে p(x) - এর যে মান পাওয়া যায়, সেটাই ভাগশেষ হবে।

উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:

ধরা যাক, p(x) = x3 - 4x2 + x + 6 এবং আমরা p(x) কে (x - 2) দ্বারা ভাগ করতে হবে।

1. প্রথমে a এর মান p(x) - এ বসিয়ে p(a) এর মান বের করি:

a = 2 হলে:
p(2) = 23 - 4 ✕ 22 + 2 + 6
= 8 - 16 + 2 + 6
= 0

তাহলে ভাগশেষ হবে p(2) = 0


2. আরেকটি উদাহরণ:

p(x) = x2 + 3x + 2 
এবং x = -1
p(-1) = (-1)2 + 3 ✕ (-1) + 2
= 1 - 3 + 2
= 0

তাহলে ভাগশেষ হবে p(-1) = 0

সারসংক্ষেপে: যদি p(x) - কে (x - a) দ্বারা ভাগ করা হয়, তাহলে ভাগশেষ হবে p(a)



উৎপাদক উপপাদ্য (Factor Theorem)
যদি p(x) একটি বহুপদী রাশি হয় এবং a একটি ধ্রুবক হয়, তাহলে x - a তখনই p(x) - এর উৎপাদক হবে যদি p(a) = 0 হয়।

ব্যাখ্যা: উৎপাদক উপপাদ্য আমাদের বলে যে, p(x) এর মধ্যে x - a তখনই উৎপাদক থাকবে যখন p(a) এর মান 0 হবে। অর্থাৎ, যদি a কে x এর স্থানে বসিয়ে p(x) এর মান 0 পাওয়া যায়, তাহলে x - a হবে p(x) এর একটি উৎপাদক।

উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:

ধরা যাক, p(x) = x2 - 5x + 6

1. প্রথমে a এর মান পরীক্ষা করি:

a = 2 হলে:

p(2) = 22 - 5 ✕ 2 + 6 = 4 - 10 + 6 = 0

এখানে দেখা যাচ্ছে p(2) = 0, সুতরাং (x - 2) হলো p(x) - এর একটি উৎপাদক।


2. অন্য একটি a এর মান পরীক্ষা করি:

a = 3 হলে:

p(3) = 32 - 5 ✕ 3 + 6 = 9 - 15 + 6 = 0

এখানে দেখা যাচ্ছে p(3) = 0, সুতরাং x - 3 হলো p(x) - এর একটি উৎপাদক।

সারসংক্ষেপে: যদি p(a) = 0, তাহলে (x - a) হলো p(x) - এর উৎপাদক।



পূর্ণবর্গ রাশি (Perfect Square Expression)
পূর্ণবর্গ রাশির ধারণা: পূর্ণবর্গ রাশি হল এমন একটি বহুপদী রাশি যা একটি বর্গ রাশির আকারে লেখা যায়। অর্থাৎ, একটি বহুপদী রাশিকে যদি (a + b)2 বা (a - b)2 আকারে লেখা যায়, তাহলে সেটিকে পূর্ণবর্গ রাশি বলা হয়।

পূর্ণবর্গ রাশির সাধারণ রূপ:

1. (a + b)2 = a2 + 2ab + b2
2. (a - b)2 = a2 - 2ab + b2

উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:

1. x2 + 6x + 9

প্রথমে, এটি পূর্ণবর্গ রাশি কিনা তা পরীক্ষা করি:

এখানে a = x এবং b = 3

a2 + 2ab + b2 আকারে পরীক্ষা করলে:
= x2 + 2 ✕ x ✕ 3 + 32
= x2 + 6x + 9


সুতরাং, x2 + 6x + 9 পূর্ণবর্গ রাশি এবং এটি লেখা যায় (x + 3)2 আকারে।

2. 4x2 - 12x + 9

প্রথমে, এটি পূর্ণবর্গ রাশি কিনা তা পরীক্ষা করি:

এখানে a = 2 এবং b = 3

a2 - 2ab + b2 আকারে পরীক্ষা করলে:
= (2x)2 - 2 ✕ 2x ✕ 3 + 32
= 4x2 - 12x + 9

সুতরাং, 4x2 - 12x + 9 পূর্ণবর্গ রাশি এবং এটি লেখা যায় (2x - 3)2 আকারে।

সারসংক্ষেপে: পূর্ণবর্গ রাশি হল এমন একটি বহুপদী রাশি যা একটি বর্গ রাশির আকারে লেখা যায়।



দ্বিঘাত রাশির উৎপাদক রূপ (Factorization of Quadratic Expressions)
দ্বিঘাত রাশি উৎপাদক করতে হলে ax2 + bx + c কে দুইটি গুণনীয়কে ভাগ করতে হয়।

উদাহরণ: x2 + 5x + 6

সমাধান: (x + 2)(x + 3)




মধ্যপদ বিভাজন পদ্ধতিতে উৎপাদক নির্ণয় (Factorization through Splitting of the Middle Term)
মধ্যপদ বিভাজন পদ্ধতিতে উৎপাদক নির্ণয় করতে হলে মধ্যপদকে দুইটি পদে বিভক্ত করা হয় এবং তারপর তাদের সাধারণ উৎপাদক বের করা হয়।

উদাহরণ: x2 + 7x + 12

সমাধান:
= x2 + 3x + 4x + 12
= x(x + 3) + 4(x + 3)
= (x + 3)(x + 4)




সাধারণ পদ্ধতিতে উৎপাদকে বিশ্লেষণ
একটি দ্বিঘাত সমীকরণ হলো একটি বহুপদী সমীকরণ যার সর্বোচ্চ ঘাত (degree) দুই। সাধারণত এটি এই রূপে লেখা হয়: ax2+bx+c = 0 এখানে, a, b, এবং c ধ্রুবক, এবং a≠0

x = -b ± b2 − 4ac          2a
এখানে, x এর দুটি মূল বা মান পাওয়া যাবে x1 এবং x2; b2−4ac কে বলা হয় "নিশ্চয়ক" বা "বিভাজক" (Discriminant)

যদি b
2−4ac>0, তবে দুইটি বাস্তব এবং ভিন্ন মূল আছে।
যদি b2−4ac>0, তবে একটি দ্বিগুণ (double) বাস্তব মূল আছে।
যদি b2−4ac>0, তবে কোনো বাস্তব মূল নেই, দুটি কল্পনা (complex) মূল আছে।




অভেদ (Identity):
অভেদ এমন একটি সমীকরণ যা সমস্ত x-এর মানের জন্য সত্য হয়। এটি মানে, একটি অভেদ সমীকরণে x-এর যেকোনো মান বসালেই সমীকরণটি সঠিক থাকবে। অভেদকে ≡ চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

অভেদের সাধারণ রূপ: যদি p(x) এবং q(x) দুটি বহুপদী রাশি হয় এবং সব x-এর জন্য p(x) = q(x) হয়, তাহলে p(x) এবং q(x) অভেদ। এটি লেখা হয়: p(x)≡q(x)

উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:

অভেদ উদাহরণ:

ধরা যাক, p(x) = (x+1)2 এবং q(x) = x+ 2x + 1

এখানে p(x) = (x+1)2 কে প্রসারিত করলে পাই:
(x+1)2 = x+ 2x + 1

সুতরাং, p(x)≡q(x) কারণ সব x-এর জন্য p(x) = q(x) সত্য।

সারসংক্ষেপে:
অভেদ এমন একটি সমীকরণ যা সব x-এর জন্য সত্য হয়।
এটি লেখা হয় p(x)≡q(x)




আংশিক ভগ্নাংশ (Partial Fraction)
আংশিক ভগ্নাংশ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি মূলদ ভগ্নাংশকে একাধিক ছোট ছোট ভগ্নাংশে বিভক্ত করা হয়। এটি বহুপদী রাশি ভগ্নাংশকে সহজভাবে বিশ্লেষণ করতে এবং সমীকরণ সমাধান করতে সহায়ক।

আংশিক ভগ্নাংশের প্রকারভেদ:

1. প্রকৃত ভগ্নাংশ (Proper Fraction): যখন বহুপদী রাশির গুণফলের মাত্রা (অংশ) নির্ধারকের মাত্রার অপেক্ষা ছোট হয়।

2. অপ্রকৃত ভগ্নাংশ (Improper Fraction): যখন বহুপদী রাশির গুণফলের মাত্রা নির্ধারকের মাত্রার সমান বা বড় হয়।

আংশিক ভগ্নাংশে বিভাজনের ধাপসমূহ:

1. প্রকৃত ভগ্নাংশে বিভাজন:

ধরা যাক,       3x + 1(x - 1)(x + 2) একটি সঠিক ভগ্নাংশ।

এই ভগ্নাংশকে আংশিক ভগ্নাংশে বিভাজন করতে পারি:

      3x + 1(x - 1)(x + 2) =   Ax - 1 +    Bx + 2

যেখানে a এবং b হলো ধ্রুবক। a এবং b নির্ণয় করতে:

3x + 1 = A(x + 2) + B(x - 1)
3x + 1 = Ax + 2A + Bx - B
3x + 1 = (A + B)x + (2A - B)

সুতরাং, A+B = 3 এবং 2A-B = 1 সমাধান করে a এবং b নির্ণয় করতে হবে।


উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা: প্রকৃত ভগ্নাংশ
ধরা যাক,       3x + 1(x - 1)(x + 2)

     3x + 1(x - 1)(x + 2) =    A(x - 1)    B(x + 2)

a এবং b নির্ণয় করে:

A = 1 এবং B = 2 পেলে:

       3x + 1(x - 1)(x + 2) =     1(x - 1) +    2(x+2)


2. অপ্রকৃত ভগ্নাংশে বিভাজন:

ধরা যাক, x3 + 1x2 + 1 একটি অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।


অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে প্রকৃত ভগ্নাংশে রূপান্তর (Methods of Converting Improper Fractions)
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ হলো এমন একটি ভগ্নাংশ যার লব বড় এবং হর ছোট। অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে প্রকৃত ভগ্নাংশে রূপান্তর করতে হলে পুরো সংখ্যা এবং ভগ্নাংশের যোগফল হিসেবে প্রকাশ করতে হয়। নিচের উদাহরণগুলো থেকে এটি স্পষ্ট হবে।

প্রথমে ভাগ করে, x3 + 1x2 + 1 = x + (-x + 1)(x2 + 1) আংশিক ভগ্নাংশে বিভাজন করতে হবে।

উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা:
ধরা যাক, x+ 1x+ 1

প্রথমে ভাগ করে:

x3 + 1x2 + 1 = x + (-x + 1) x2 + 1

এখানে x হলো ভাগফল এবং -x + 1x2 + 1 হলো আংশিক ভগ্নাংশ।

সারসংক্ষেপে:
আংশিক ভগ্নাংশ হলো একটি মূলদ ভগ্নাংশকে ছোট ভগ্নাংশে বিভক্ত করার প্রক্রিয়া।
প্রকৃত ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে ভাগফল নির্ধারণ করে আংশিক ভগ্নাংশে বিভাজন করা হয়।


No comments:

Post a Comment